লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট কর্নেল অলি আহমদ বলেছেন, ১৫ বছর ধরে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখা সরকার আজ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই। আইন ও বিচারব্যবস্থা জনসাধারণের স্বার্থরক্ষায় ব্যর্থ। প্রশাসনের প্রতিটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি। ক্ষমতার লোভ সব মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। দেশে বাক-স্বাধীনতা নেই। বিভিন্ন কালো আইনের ভয়ে জনগণ জিম্মি হয়ে আছে। তারপরও আমরা সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য লড়াই করে যাচ্ছি। কারণ, জনগণের মঙ্গলের জন্য রাজনীতি, রাজনীতির জন্য জনগণ নয়। সরকার আমাদের দমন করার জন্য সমগ্র প্রশাসনকে লেলিয়ে দিয়েছে। আইন-প্রয়োগকারী পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আদালত ও জেল-হাজতের পেছনে শত শত কোটি টাকা খরচ করছে। এ টাকা শ্রমিকের কর্মসংস্থানে ব্যয় করা যেতো। কেন রাষ্ট্রীয় সম্পদ এভাবে লুটিয়ে দেওয়া হচ্ছে- এর সদুত্তর কে দেবে?
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
অলি আহমদ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ হুমকির মুখে, শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছে, শত শত গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে গেছে। রিজার্ভ সংকটাপন্ন। দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ আত্মসম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে পর্যুদস্ত। তাই আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের নির্যাতন-নিপিড়ন বন্ধ করুন, মিথ্যা ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহার করে নিন এবং অন্যায়ভাবে শাস্তি দেওয়া বন্ধ করুন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদসহ বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের অবৈধ জেল-জুলুম-শাস্তি থেকে মুক্ত করুন। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছাড়া, নিশিরাতে বা বন্দুকের জোরে নির্বাচন করা হলে, তা বর্তমান সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে। দেশের জনগণকে জিম্মি করে দেশে কি শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরে আসবে? ইতিহাস তা সাক্ষী দেয় না। দেশের সার্বভৌমত্বকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। সাংবিধানিক অধিকার, মানবাধিকার, ও সবার ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। দেশের অর্থনীতি ও গরিব মেহনতী মানুষের সমস্যাগুলো বিবেচনায় নিন। দেশকে ধ্বংস থেকে রক্ষা করার ব্যাপারে চিন্তা করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের ছোট-বড় সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আবেদন করছি, নিজ নিজ জায়গা থেকে আমাদের সবাইকে লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হবে। প্রশাসনিক শক্তির অপব্যবহার করে ভাগ-বাটোয়ারার নির্বাচন করার চিন্তা পরিহার করতে হবে। দেশের সবার প্রতি আমি আবেদন করছি, সাহসিকতার সঙ্গে আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিগুলোতে অংশগ্রহণ করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করুন। ভয় পেলে চলবে না। মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হলো তার আত্মসম্মান। সেই সম্মান হারিয়ে কি হবে, একবার ভেবে দেখুন। আপনাদের নীরবতা দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবে। নিজের নাগরিক অধিকার আদায়ে সোচ্চার হোন। অন্যথায় কেউ এ সমস্যা থেকে বের হওয়ার পথ পাবেন না। দেশের নিপীড়িত ও মেহনতী মানুষের দীর্ঘশ্বাসে সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। মহান আল্লাহর বিচার থেকে কারো রক্ষা হবে না।