বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করেছে ২০২৩ সাল । এ বছর মানবাধিকার ও নির্বাচন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সরকারের টানাপোড়েন ছিল দেশের সবচেয়ে আলোচনার বিষয়। একইসাথে পুরো বছরজুড়ে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন এবং আওয়ামী লীগের পাল্টা কর্মসূচিতে সরগরম ছিলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। বছর শেষে বিএনপি সংসদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে লাগাতার আন্দোলন শুরু করে। এর মধ্যেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। পুরো বছরজুড়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য আটটি ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।
যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনায় শেখ হাসিনা
বছরের শুরুতেই দেখা যায়, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ও মানবাধিকার নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নানা তৎপরতা ছিলো। ১০ এপ্রিল বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কনের বৈঠক হয়। সে বৈঠকে সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের তাগাদা দেয় আমেরিকা। অ্যান্টনি ব্লিঙ্কন বলেছেন, বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু হয়, সেজন্য আমরা তো অবশ্যই, সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে।
মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি নিয়েও জোর গুরুত্ব দেয় যুক্তরাষ্ট্র। মূলত ২০১৪ সাল ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিতর্কের কারণে এবারের নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ ছিল। ওই মাসেই জাতীয় সংসদে শেখ হাসিনা এক বক্তব্যে আমেরিকার সমালোচনা করে বলেছেন, আমেরিকা বাংলাদেশের ক্ষমতায় পরিবর্তন আনতে চায়।
এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিভিন্ন সময় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে সরকারের শীর্ষ মহল থেকে।১৬ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র হয়ত বা তাকে ক্ষমতায় চায় না বলেই র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। গত ১৪ বছর ধরেই শুধুমাত্র দেশে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা রয়েছে, তাই আমরা উন্নতি করতে পারছি।
নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে কূটনৈতিক তৎপরতা
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান ইত্যাদি বিষয় নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের তৎপরতায় সরকারের মধ্যে অস্বস্তি ছিলো। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কয়েকজন নেতা, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে নির্বাচন নিয়ে পিটার হাসের বৈঠক করেন। তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ। তবে বিএনপি দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের এমন ভূমিকা দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে পারবে। মার্কিন তৎপরতার এমন সময়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ‘ভারতে গিয়ে শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে অনুরোধ করেছি’ এমন মন্তব্য করে তীব্র সমালোচনার মধ্যে পড়েন। জুলাইয়ে ইইউর প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল ঢাকা সফর করে। এরপর তারা ঘোষণা করে, নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে না। অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশে প্রায় তিন সপ্তাহের সফর শেষ করে পাঁচ দফা সুপারিশ করে। সেখানে সংলাপের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়। সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নানামুখী তৎপরতা প্রেক্ষাপটে বহুদিন অনেকটা নীরব থাকার পর ভারত নভেম্বর মাস থেকে সক্রিয় অবস্থান জানাতে শুরু করে। নভেম্বরে দিল্লিতে ভারতের সঙ্গে আমেরিকার মন্ত্রিপর্যায়ের যে বৈঠক হয়, সেখানে বাংলাদেশের নির্বাচন দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয় উল্লেখ করে ভারত যুক্তরাষ্ট্রকে বার্তা দেয়। এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। একটি বন্ধু এবং সঙ্গী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সম্মান জানাই আমরা”।
বাংলাদেশের নির্বাচন দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয় উল্লেখ করে রাশিয়া ও চীনের পক্ষ থেকেও বিবৃতি দেয়া হয়। এর মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ তৎপরতা দেখা গেছে নভেম্বর মাসে। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু রাজনৈতিক দলগুলোকে “পূর্বশর্ত ছাড়া” সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে ১৩ই নভেম্বর একটি চিঠি পাঠান। কিন্তু এ আহ্বানের পরও সংলাপে বসার ক্ষেত্রে অবস্থানের পরিবর্তন হওয়নি বিএনপি ও আওয়ামী লীগের।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা
বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের জন্য মে মাসে নতুন ভিসা নীতির ঘোষণা করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। এই নীতির আওতায় কোন বাংলাদেশি যদি দেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের প্রক্রিয়া ব্যাহত করার জন্য দায়ী হন বা চেষ্টা করেন, তাহলে তাকে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা দেয়ার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই নীতির আওতায় পড়বেন বর্তমান এবং সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা, সরকার – সমর্থক ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যবৃন্দ, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সদস্যরা। এ ঘোষণার পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, “নতুন ভিসা নীতিতে বাংলাদেশ সরকার বিচলিত নয়, কারণ সরকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ”।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, মে মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করে ওই সাক্ষাৎকার দেয়ার আগেই প্রথম সপ্তাহে ওই ভিসা নীতির কথা সরকারকে জানানো হয়েছিলো। যারই প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা করেন বলে মনে করা হয়। ভিসা-নীতি ঘোষণার চার মাস পরে সেপ্টেম্বরে এসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশি কিছু নাগরিকের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রক্রিয়া শুরুর কথা জানায়। তবে, এতে কারো নাম উল্লেখ করা হয় নি।
বিএনপির আন্দোলন ও ধরপাকড়
সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবি নিয়ে ২৮শে অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ ডাকে বিএনপি। নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল দলটি। বিএনপির সমাবেশের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেয় আওয়ামী লীগ । বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে শান্তি ও উন্নয়ন কর্মসূচি নামে এ সমাবেশ ডাকে আওয়ামী লীগ। কিন্তু বিএনপির সমাবেশ শেষ হয় উভয় পক্ষের ধাওয়া -পাল্টা ধাওয়ায় ব্যাপক সংঘর্ষ ও সংঘাতের মধ্যে দিয়ে। সেদিন হামলা হয় প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনে, পুলিশ লাইনস হাসপাতালে পোড়ানো হয় কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স। এ সহিংসতায় এক পুলিশ সদস্যসহ দুইজন নিহত হন। ওই নিহত ব্যক্তিকে নিজেদের কর্মী দাবি করে বিএনপি। মহাসমাবেশে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী-লীগ নেতাকর্মীরা হামলা করেছে অভিযোগ করে সাড়ে তিন বছর পরে হরতাল আহ্বান করে বিএনপি। এতে জামায়াতে ইসলামীও সমর্থন দেয়। পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে সারা দেশে শান্তি সমাবেশ ও মিছিল করার কথা জানায় আওয়ামী লীগ। এরপর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, নির্বাচন ঘিরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে যাতে কোন আন্দোলন গড়ে উঠতে না পারে, সেজন্যই এই ধরপাকড় করা হচ্ছে।
সমাবেশের পরের কয়েক দিনেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদসহ বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সহিংসতার ঘটনার মামলায় সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরপাকড় শুরু হয়। গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে যায় বেশিরভাগ বিএনপি নেতাকর্মীরা। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, সারা দেশে প্রায় ৬০০ মামলায় ২২ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি ৪৪ হাজারের বেশি।
আবারও আলোচনায় অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালে রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়ে আলোচনায় আসেন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেই সময় এক খোলা চিঠিতে ড. ইউনূস দেশের মানুষকে পুরাতন রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার আহবান জানিয়েছিলেন। তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার চেষ্টা চালায়। যা রাজনীতিতে “মাইনাস টু ফর্মূলা” নামে পরিচিত। ওই সময় থেকেই বর্তমান ক্ষমতাসীন দলটি ড. ইউনুসের ওপর ক্ষুব্ধ বলে ধারণা করা হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় ড. ইউনুসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় মামলা হয়। এ বছর ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে তার প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকমে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ডজনখানেক মামলা হয়। মামলার মাধ্যমে ড. ইউনুসকে হয়রানি না করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, হিলারি ক্লিনটনসহ বিশ্বের প্রায় দুইশ খ্যাতিমান ব্যক্তি বিবৃতি দেন। বছর শেষে ড. ইউনূসের একটি মামলায় রায় ঘোষণার জন্য পহেলা জানুয়ারি তারিখ নির্ধারণ করে আদালত।
নির্বাচনের তফসিল
অক্টোবর মাসের শেষ থেকে বিএনপি ধারাবাহিক আন্দোলন ঘোষণা করে গেলেও তার মধ্যেই নির্বাচনী তফসিল প্রকাশ করে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন। বিরোধী দল ও সরকারের মধ্যে বিরোধ যখন চরমে তখন ১৫ ই নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হবে বলে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে সিইসি জানান, “নিবন্ধিত সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে একাধিকবার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে তারা তা প্রত্যাখ্যান করেছে”।
তবে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে ডামি নির্বাচন বলে উল্লেখ করে। একইসাথে তা বর্জনের আহবান জানিয়ে সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়। যদিও এই কর্মসূচি নিয়ে খোদ বিএনপিতেই অস্বস্তি রয়েছে। নিজ দলের নেতাকর্মীদের ও আদালতে মামলায় হাজিরা না দিতে নির্দেশনা দেয় বিএনপি। যদিও আদালতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ আদেশ মানছে না নেতাকর্মীরা। অসহযোগেরও বিশেষ কোন প্রভাব দেখা যায়নি।
বিএনপিকে নির্বাচনে আনার তৎপরতা
আসন্ন নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও গ্রহণযোগ্য করে তুলতে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিলো বলে সরকারের একজন মন্ত্রীর বক্তব্য ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। ১৭ ডিসেম্বর একটি টেলিভিশন চ্যানেলে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের একটি সাক্ষাৎকার প্রচার হয়।সেখানে তিনি বলেছেন, নির্বাচনে আনার জন্য বিএনপির সব কারাবন্দী নেতাদের মুক্তির প্রস্তাব দেয়া হয়েছিলো। বিএনপি সেই প্রস্তাবেও রাজি হয় নি।
এই বক্তব্য নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা তৈরি হলে সরকারের মধ্যেও অস্বস্তি তৈরি হয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমন বক্তব্যকে কৃষিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত মত বলে উল্লেখ করেন। জানান, এমন কোন প্রস্তাব সরকার বিএনপিকে দেয় নি। তিনি ২৬ ডিসেম্বর বলেন, বিরোধী দল নির্বাচনের বাইরে থাকুক এটা আমরা কখনোই চাইনি। কিন্তু বিএনপিসহ যারা নির্বাচনে আসেনি , তারা আসলে নির্বাচনটা আরো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতো”। এর আগে ২৩ নভেম্বর বিদেশে অবস্থানরত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলছিলেন, আমরা তো জামিনের জন্য আন্দোলন করি নাই। আমরা তো আন্দোলন করছি এদেশের মানুষের ভোটাধিকারের জন্য, এ অবস্থাতে নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। প্রশাসন থেকে শুরু করে সবই তাদের কন্ট্রোলে। কেয়ারটেকার সরকার আসুক আমরা নির্বাচনে যাব, তাছাড়া আমরা নির্বাচনে যাব না।
আসন ভাগাভাগি ও বিরোধী দল
তফসিল ঘোষণার পর থেকে আসন ভাগাভাগির বিষয়টি আলোচনায় আসে। নিরপেক্ষ সরকারের দাবি না মানায় বিএনপি ও সমমনা দলগুলো নির্বাচন বর্জন করায় অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন করা আওয়ামী লীগের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বছর নিবন্ধিত ৪৪ টি দলের মধ্যে ২৯ টি দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। সমঝোতার পর ২৬ আসন জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। তবে, এবারের নির্বাচনকে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করবে বলে মনে করছে ক্ষমতাসীনরা। এবারের নির্বাচনে বিএনপির সাবেক নেতাদের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সমর্থনে বেশ কিছু নতুন দল আলোচনায় আসে। কিংস পার্টি নামে এসব দল পরিচিতি পেয়েছে।