প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রাইসি। ফোনালাপে দুই নেতা কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে আলাপ করেন। সোমবার (১৭ এপ্রিল) বিকালে এ ফোন করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ও ইরানের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য আরও বেশি উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
প্রধানমন্ত্রী নিয়মিত যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) বৈঠকের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রকৃত সম্ভাবনার অনেক নিচে রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথোপকথনের সময় দুই দেশের চেম্বার সংস্থার মধ্যে একটি জয়েন্ট বিজনেস কমিশন (জেবিসি) গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। প্রধানমন্ত্রী নিয়মিত যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) বৈঠকের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
বাংলাদেশ চলতি বছরের কোনো এক সময়ে তেহরানে ষষ্ঠ বৈঠক আহ্বান করার জন্য কাজ করছে জানিয়ে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, জেইসি প্ল্যাটফর্ম উভয় পক্ষকে বাণিজ্য বাধা, বিদ্যমান আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এবং ব্যাংক লেনদেনে বিধিনিষেধগুলি কাটিয়ে ওঠার উপায় অন্বেষণ করতে সহায়তা করবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও ইরানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দৃঢ় ভিত্তি হচ্ছে উভয় দেশের অভিন্ন ইতিহাস, বিশ্বাস ও সংস্কৃতি। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান উৎপাদন সক্ষমতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার দেশ পরিমাণগত মূল্যে মানসম্মত আমদানির উৎস হতে পারে।
তিনি ইরানেও সেইসব পণ্য রপ্তানি করতে বাংলাদেশের আগ্রহ ও সক্ষমতার কথা ব্যক্ত করেন। টেলিকনফারেন্স চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন যে, বাংলাদেশ ও ইরান ওআইসি এবং ডি-৮ এর সদস্য হওয়ায় অনেক সময় একে অপরকে সমর্থন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মে, বিশেষ করে জাতিসংঘে ইরানের প্রতি সমর্থন বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি মানবাধিকার কাউন্সিলে কানাডার প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ভোটের কথা উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আর্থিক সহায়তা হ্রাস সত্ত্বেও পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি দেওয়া মানবিক আচরণ সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট রাইসিকে অবহিত করেন। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি অগ্রাধিকার হওয়া উচিত বলে তিনি ওআইসিসহ আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থন দেওয়ার জন্য ইরানের প্রতি আহ্বান জানান।
দীর্ঘ ২২ মিনিট টেলিফোন কথোপকথন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইরানের প্রেসিডেন্টকে তার সুবিধামত সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। তিনি তাকে এবং ইরানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণকে ঈদুল ফিতরের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান।
সূত্র : বাসস