সারাদেশ

‘হলুদ তরমুজ চাষে আগ্রহ বাড়ছে, বিঘাপ্রতি লাখ টাকা লাভ’

বাংলার কথা বাংলার কথা

প্রকাশিত: ৮:২০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১১, ২০২৩

সাতক্ষীরায় কৃষকদের মাঝে হলুদ তরমুজ চাষ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অমৌসুমে তরমুজ চাষ করে কৃষকেরা বেশ লাভবান হচ্ছেন। একদিকে কৃষকেরা অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন, অপরদিকে অমৌসুমে এই ফল খেয়ে মানুষের পুষ্টির চাহিদাও মিটছে। সাতক্ষীরার তালা উপজেলার নগরঘাটা বিলে টানা তৃতীয় বারের মতো হলুদ তরমুজ চাষ করেছেন নগরঘাটা গ্রামের কৃষক মাসুদ হুসাইন। তিনি পর পর দুই বছর মাত্র ৫ কাঠা জমিতে এই জাতের তরমুজ চাষ করে বেশ লাভবান হন। এ বছর তিনি ১ বিঘা জমিতে হলুদ তরমুজ চাষ করে খরচ বাদে লাভ করেছেন প্রায় লাখ টাকা। কৃষক মাসুদের সফলতার গল্প শুনে সাতক্ষীরার অনেক কৃষক এখন হলুদ তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। ফলটির চাষ জেলার বিভিন্ন এলাকায় এখন ছড়িয়ে পড়েছে।

মাসুদ হুসাইন বলেন, পর পর তিন বছর ধরে হলুদ তরমুজ চাষ করে আসছি। ভালোই লাভ এতে। তালা উপজেলার ‘উন্নয়ন প্রচেষ্টা’ নামের একটি বেসরকারি সংগঠন প্রথম হলুদ তরমুজের বীজ দেয়। শুধু বীজ নয়, তারা প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করে। উন্নয়ন প্রচেষ্টার কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে এই ফল চাষে সফল হয়েছি। সাতক্ষীরার বাজারে এক কেজি তরমুজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। আর খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।এক বিঘা জমিতে চাষ করতে খরচ হয় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। আর বিক্রি করা সম্ভব ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে বিঘাপ্রতি প্রায় লাখ টাকা লাভ হয়।

কৃষি শ্রমিক জবেদ আলী বলেন, তরমুজ খেতে নিয়মিত কাজ করে সংসার চালাচ্ছে আমার মতো অনেকই। সারাদিন কাজ করে সাড়ে ৪শ’ টাকা মজুরি পাই। এতেই আমার সংসার চলছে। বর্ষাকালে তো কাজের অভাব। কিন্তু তরমুজ খেতে শ্রমিকদের কাজের সুযোগ হয়েছে। প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে হলুদ তরমুজের খেত দেখতে এবং কিনতে ভিড় জমাচ্ছে মানুষ।

উন্নয়ন প্রচেষ্টার কৃষি বিভাগের প্রধান কৃষিবিদ নয়ন হোসেন বলেন, গ্রীষ্ম মৌসুমে তরমুজ চাষ করে কৃষকেরা বেশ সফল। আমরা কৃষক পর্যায়ে তরমুজের বীজ, সারসহ সবধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। অধিক লাভ হওয়ায় প্রতিবছর আবাদ বাড়ছে। কৃষকেরা ভালো লাভ পাচ্ছেন। গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে সরকার সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করলে একদিকে এই বাহারি রঙের তরমুজ বিদেশে রপ্তারি করা যাবে। অন্যদিকে, দেশে পুষ্টির চাহিদা মিটবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক ইকবল হোসেন বলেন, চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমে জেলায় ২৭ হেক্টর জমিতে ইয়েলো কিংসহ কয়েক জাতের তরমুজ চাষ হয়েছে। এটা একটি অমৌসুমি ফল। সাতক্ষীরায় মাটির গুনাগুণের কারণে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করে বেশ সফল হয়েছে কৃষকেরা। বিধায় প্রতবছর এই জাতের তরমুজ চাষের পরিধি বাড়ছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় কৃষি বিভাগ কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে।