শীত এলেই চারদিকে জ্বর, সর্দি-কাশি, গলাব্যথা বা শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণ দেখা দেয়। এর মানেই যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ, তা কিন্তু নয়। শীত মৌসুমে বেড়ে যায় নানা ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ, বাড়ে নিউমোনিয়ার প্রকোপ। এদিকে বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের নতুন ‘উপধরন’ দিয়ে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে অতিমারির আতঙ্ক ফিরে আসছে কি না, তা নিয়ে দ্বিধান্বিত সবাই। হালকা সর্দিজ্বরের মতো সাধারণ উপসর্গ সঙ্গে নিয়ে কি স্বাভাবিক জীবনধারা চালিয়ে যাওয়া উচিত?
উপসর্গ মৃদু হলেও সতর্কতা জরুরি। কারণ, করোনাভাইরাসের নতুন উপধরনও বেশ সংক্রামক। আপনি হয়তো মৃদু উপসর্গে কিছুদিন ভুগবেন, এরপর সেরে উঠবেন। কিন্তু সংক্রমণের সময়সীমার মধ্যে আপনি যদি এমন কারও সংস্পর্শে আসেন, যিনি উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন, তাঁর জন্য কিন্তু তা মারাত্মক সংক্রমণের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে, পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তি, দীর্ঘমেয়াদি রোগ, যেমন ডায়াবেটিস বা কিডনির রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি, আগে থেকেই হৃৎপিণ্ড বা ফুসফুসের সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তি এবং অন্তঃসত্ত্বা নারীরা উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন।
করোনাভাইরাসের নতুন উপধরনের উপসর্গ কী কী?
জ্বর
সর্দি
নাক বন্ধ
কাশি
গলাব্যথা
শ্বাসপ্রশ্বাসে অসুবিধা
শরীরব্যথা
মাথাব্যথা
বমিভাব বা বমি
পাতলা পায়খানা
পেটব্যথা
ঘ্রাণ বা স্বাদের অনুভূতির পরিবর্তন
করণীয়
এসব উপসর্গের কোনোটি দেখা দিলে অবশ্যই সচেতন হোন, যাতে আপনার কাছ থেকে অন্য কেউ সংক্রমিত হতে না পারে। যতটা সম্ভব, ঘরেই থাকুন। মানসম্মত মাস্ক পরুন, ঘরে এবং বাইরে। ব্যক্তিগত ব্যবহার্য সামগ্রী কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে নিন। করোনা সংক্রমণ পরীক্ষার ফলাফল ‘পজিটিভ’ না হলেই যে আপনি করোনা সংক্রমিত নন, তা কিন্তু নিশ্চিত হওয়ার সুযোগ নেই। তাই ফলাফল ‘পজিটিভ’ আসুক বা ‘নেগেটিভ’, ন্যূনতম পাঁচ দিন এসব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা অবলম্বন করাই শ্রেয়।
প্রতিরোধের প্রস্তুতি
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্যও সচেতন থাকুন। ঘরের বাইরে গেলেই মাস্ক পরার অভ্যাস ফিরিয়ে আনুন। হাত জীবাণুমুক্ত রাখুন। কফ, থুতু ফেলুন নির্দিষ্ট স্থানে। হাঁচি-কাশির আদবকেতা মেনে চলুন। ব্যবহৃত টিস্যু বা রুমাল যেখানে সেখানে রাখবেন না। বাড়িতে বাতাস প্রবাহের সুযোগ বাড়িয়ে দিন। সম্ভব হলে অতিরিক্ত ভিড়ের স্থান এড়িয়ে চলুন। করোনাভাইরাসের টিকা নেওয়া না থাকলে তা নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
সূত্র : সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি), যুক্তরাষ্ট্র