জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা শায়খ জিয়া উদ্দীন বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে দলের সহ- সভাপতি এ্যাডভোকেট মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরী দলের কোনো কোনো ব্যক্তিকে দলীয় সিদ্ধান্ত ও অবস্থানের বিপক্ষে আসতে প্ররোচিত করাসহ এমন কিছু কর্মকাণ্ড করেছেন যা দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী। যেহেতু দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী তার এসব আচরণ দ্বারা দলের নীতি-আদর্শ ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে তাই তার প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলীয় সকল পর্যায়ের পদ স্থগিত করা হলো।
আজ (২৪ নভেম্বর) শুক্রবার বাদ জুমা জমিয়তের প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীনের স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎ করেছেন ইসলামপন্থী ৯টি দলের নেতারা। যেসব রাজনৈতিক দলের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, সেই দলগুলো হচ্ছে- ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট, আশেকানে আউলিয়া ঐক্য পরিষদ এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। বৈঠকে বিভিন্ন দলের ১৪ জন নেতা অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ, মাওলানা আবুল হাসনাত আমিনী, মুফতিফয়জুল্লাহ, সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী, মিসবাহুর রহমান চৌধুরী, এডভোকেট মাওলানা শাহীনূর পাশা চৌধুরী, আলম নূরী, আবুল খায়ের প্রমুখ।
জানা যায়, ইসলামপন্থী দলগুলোর নেতারা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে তাঁদের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন। অনেকেই নিজেদের সংসদ সদস্য হওয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সহায়তা চান। জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতার পক্ষের ইসলামি শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে এবং তা সুষ্ঠু ও অবাধ হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের জন্য ধন্যবাদ দেন জানান ইসলামপন্থী দলের এই নেতারা। পরে প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ লেখা একটি ক্যালিওগ্রাফি উপহার দেন।
গত মঙ্গলবার ইসলামপন্থী ছয়টি দল এক বৈঠক শেষে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, এই মুহূর্তে দেশে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। এমন অবস্থায় জনমতকে উপেক্ষা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রধান আমির মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের ও জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন। এর দুদিন পরই মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, আবুল খায়ের এবং জমিয়তের সহ সভাপতি এডভোকেট মাওলানা শাহীনূর পাশা চৌধুরীগণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগ্রহ দেখালেন।