সারাদেশ

সিলেটে সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি লিটনকে অব্যাহতি

বাংলার কথা ২৪ বাংলার কথা

প্রকাশিত: ৯:০৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৯, ২০২৩

যৌন নিপীড়ন ও অশালীন আচরণের অভিযোগে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের সভাপতি আমিনুল ইসলাম লিটনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি পরিষদ ও প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে।

আজ রোববার সন্ধ্যায় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় সদস্য শাসসুল আলম সেলিম আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জেনে আমরা তাঁকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়েছি, তিনি সাড়া দেননি। প্রশাসনিক বা আমাদের কাছে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।’

আমিনুল ইসলাম লিটন কথাকলি-সিলেট নামের স্থানীয় একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনেরও সভাপতি। তাঁকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে অন্য আরেকটি সাংস্কৃতিক দল ‘নগরনাট’। পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে কথাকলি-সিলেট ও সম্মিলিত নাট্য পরিষদকে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

রোববার দুপুরে নগরনাটের কার্যকরী কমিটির সদস্য অরুপ বাউল স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সাম্প্রতিক সময়ে কথাকলি, সিলেটের নাট্যকর্মী আমিনুল ইসলাম লিটনের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক নারী সংস্কৃতিকর্মী যৌন নিপীড়ন ও অশালীন আচরণের অভিযোগ উপস্থাপন করেন। এই অভিযোগগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে সচেতন মহল থেকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।

এসব ন্যক্কারজনক ঘটনায় আমরা নগরনাট আমিনুল ইসলাম লিটনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই। আমরা মনে করি, এই ঘটনাগুলোর দায় সিলেটের প্রতিটি নাট্যকর্মী, প্রতিটি নাট্যদল এবং সম্মিলিত নাট্যপরিষদ সিলেট এড়িয়ে যেতে পারে না। যত দিন পর্যন্ত তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারবেন না, তত দিন নগরনাটের সকল সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড থেকে আমিনুল ইসলাম চৌধুরী লিটনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।’

এদিকে এ বিষয়ে জ্যেষ্ঠ সংস্কৃতিকর্মী আমিনুল হক চৌধুরী লিটনের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তিনি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি বলেন, ‘এসব ষড়যন্ত্র। আমার বিরুদ্ধে আদালতে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হওয়া তো দূরের কথা, আজ পর্যন্ত এসব অভিযোগে কোনো মামলাও দায়ের করেনি কেউ।’

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কল রেকর্ড তাঁর নয়—এমন দাবি করে লিটন এটিকে ‘কারসাজি’ ভরে আখ্যায়িত করেন। সব ধরনের সাংস্কৃতিক সংগঠন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথাও জানান লিটন। তিনি লেখেন, ‘আমি যত ধরনের সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে জড়িত আছি, সব জায়গা থেকে আপাতত বিরতি নিচ্ছি, কারণ আমি চাই না আমার জন্য আমার কোনো বন্ধু বা সহকর্মী বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ুক।’

সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি রজত কান্তি গুপ্ত জানান, ‘এ রকম ঘটনা সিলেটের সংস্কৃতি অঙ্গনের জন্য লজ্জাজনক। সম্মিলিত নাট্য পরিষদ এ বিষয়ে একটি যৌথ সভা করেছে। সভায় সিদ্ধান্তগুলো যার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে ওনার সংগঠনকে জানানো হবে। আমরা এ রকম ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই আপস করব না।’